৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর রাষ্ট্র সংস্কারের প্রসঙ্গটি নতুন করে আলোচনায় আসে। সেই ধারাবাহিকতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করে। এই কমিশনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংবিধান সংস্কার কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. আলী রিয়াজ।গত তিন মাসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ পেশাজীবীদের সাথে আলোচনা করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। তাদের মতামতের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি হচ্ছে। আগামী ৭ জানুয়ারি সরকার প্রধানের কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
জানা গেছে, চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের পর কার্যকর সংসদ বহাল রাখা, বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা ফেরানো, ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের উপায় নিয়ে সুপারিশ করবে আলী রিয়াজের কমিশন।এ বিষয়ে আলী রিয়াজ বলেন, ক্ষমতা যেন এক ব্যক্তির হাতে না যায়, সেটি আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। পাশাপাশি জবাবদিহিতা নিশ্চিতের ওপরও জোর দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া, সংসদ যাতে কাজ করতে পারে সেজন্য কমিটিগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।
এদিকে, সংসদে ‘ফ্লোর ক্রসিং’ বা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে না যাবার বিধান সংবলিত ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল এবং সরকার প্রধানের অসীম ক্ষমতা কমানোর ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত রয়েছে বলেও জানান তিনি।এর আগে, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় তিন জোটের রূপরেখায় নানা সংস্কারের কথা বলা হয়েছিল। তবে গত দুই যুগে ক্ষমতায় থেকেও দলগুলো তা বাস্তবায়ন করেনি। এমন পরিস্থিতিতে এবারেও ঐক্যমত হওয়া বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।
এ বিষয়ে আলী রিয়াজ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের আগেও রাজনৈতিক দলগুলোর একটি বড় অংশ সংস্কারের কথা বলেছিল। কমিশনের সুপারিশ আদতে রাজনীতিবিদরাই বাস্তবায়ন করবে। দেশ তারাই চালাবে। এর কোনো বিকল্প নেই। তাছাড়া, রাজনীতিবিদদের বিকল্প খোঁজাও দেশের জন্য বিপজ্জনক। এ সময় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর রাখতে পারলে রাজনৈতিক সংকট কমবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।